রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার , কালের খবর :
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ৬ নং টেংরা ইউনিয়নের গণেশপুর গ্রামের ফিশারী মালিক জুবেল আহমদের নিকট তছকির মিয়াগংদের দাবীকৃত ২ লাখ টাকা চাদা না দেওয়ায় তাকে ও তার পরিবারকে বার বার হত্যার চেষ্ঠা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় তার ফিশারী ও ফিশারী পাড়ের মূল্যবান গাছপালা লুটপাট সবজি বাগান নষ্ট করাসহ কয়েক লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করা হয়েছে বলে জানা যায়। সংগঠিত প্রতিটি ঘটনায় রাজনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও প্রভাবশালী তছকিরগংদের বিরুদ্ধে রাজনগর থানা মামলা নেয়নি। এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়্যাল ম্যাজিস্ট্যস্ট আদালতে দুটি মামলা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্যাট আদালতে একটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী জুবেল আহমদ। বর্তমানে মামলা দুটি রাজনগর থানায় তদন্তাধীন রয়েছে। তছকির গংদের অত্যাচারে জুবেল আহমদ ও তার পরিবারের সদস্যরা জানমালের নিরাপত্তা হীনতায় রয়েছেন। যে কোনো সময় তছকির গংরা তাদের জায়গা জমি দখল করাসহ প্রাণে মেরে ফেলতে পারে বলে জুবেল আহমদ জানান। জুবেল আহমদের বিভিন্ন মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, একই গ্রামের তছকির মিয়া, ফিরোজ মিয়া, কুতুব মিয়া, খওয়াজ মিয়া, সুফিয়ান মিয়া, আলকুছ মিয়া, তাজুদ মিয়া, চাঁন মিয়া, পায়েল মিয়া, খালিক মিয়া গংরা অত্যাচারি ও চাদাবাজ প্রকৃতির লোক । জুবেল আহমদ তার নিজস্ব সত্ব দখলীয় জমিতে ফিশারী খনন করে বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ ও ফিশারীর পাড়ে বিভিন্ন জাতের সবজি ও চারাগাছ রোপন করে নিজের জীবন জিবিকা নির্বাহ করছেন। উল্লেখিত তছকিরগংরা প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে গত ৫ এপ্রিল জুবেল আহমদের ফিশারীতে এসে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাদা না দিলে জুবেল আহমদের ফিশারীর মাছ লুট করে নেওয়া ও গাছ গাছালি কেটে ফেলাসহ তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণ হত্যার হুমকি দেয়। জুবেল আহমদ তাদের নির্ধারিত দুইদিনের মধ্যে চাঁদা না দেওয়ায় গত ১২ এপ্রিল শনিবার তছকির গংরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ফিশারীতে আসে এবং তার নিকট আবারও দুই লক্ষ টাকা চাদা দাবী করে। জুবেল আহমদ চাদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে রশি দিয়ে তার হাত পা বেঁধে ফেলে ও চিৎকার না করার জন্য মুখে কস্ট্রিপ লাগিয়ে দেয়। পরে ফিশারীর মাছ লুট করে ও ফিশারীর চারপাশে লাগানো মূল্যবান গাছ পালা কেটে নিয়ে যায়। এ সময় সবজি বাগানে পেট্টোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে জুবেল আহমদের ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ ব্যাপারে রাজনগর থানায় জুবেল আহমেদ লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও তার অভিযোগটি রাজনগর থানায় রের্কডভুক্ত করা হয়নি। পরে ভুক্তভোগী জুবেল আহমদ উপরোক্ত বিষয়ে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রট আদালতে মামলা করেন। মামলা নং : সি আর ৯৮/২০২০(রাজ)। জুবেল আহমদ উপরে উল্লেখিত মামলা করার কারনে তছকির গংরা মামলার বাদী ও স্বাক্ষীগণের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার লক্ষ্যে গত ১১ আগস্ট মঙ্গলবার দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে জুবেল আহমেদের বাড়িতে প্রবেশ করে। এসময় জুবেল আহমদের ভাই সোহেল মিয়াকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে দা দিয়ে ফিরোজ মিয়া মাথাতে কুপিয়ে জখম করে এবং ফিরোজ মিয়ার সাথে থাকা অন্যান্য ব্যক্তিরা তার উপরে লোহার রড দিয়ে মারপিট করে। এসময় সোহেল মিয়ার স্ত্রী রুজিনা বেগমের শ্লীলতাহানীর অভিযোগ রয়েছে। এসময় তার বসত ঘরের ভিতর থেকে তছকির গংরা ৭৫ হাজার টাকার জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। উক্ত ঘটনায়ও রাজনগর থানায় অভিযোগ দাখিল করিলে রাজনগর থানা মামলা রেকর্ড করেনি। এ ব্যাপারে জুবেল আহমদ বাদী হয়ে মৌলভীবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। মামলা নং সিআর ১১০/২০২০ (রাজ) । তছকিরগংদের বিরুদ্ধে জুবেল আহমদ দুটি মামলা করার কারনে ১১ আগস্ট শনিবার তিনি বাড়ি হইতে টেংরা বাজার গেলে তছকির গংরা তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাবে বলে হুমকি দেয়। এবং গত ১১ আগস্ট জুবেল আহমদ মৌলভীবাজার যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি হতে রওয়ানা দিলে রাস্তার মধ্যে তছকির গংরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাকে ঘেরাও করে। আশপাশের লোক জন এসে তাকে রক্ষা করে। এ সময় তছকির গংরা হুমকি দিয়ে যায় সুযোগ পেলে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে প্রাণে মেরে গুম করে ফেলবে। নতুবা বাড়ি ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে গ্রাম ছাড়া করবে। এব্যাপারে জুবেল আহমদ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত মৌলভীবাজারে নিরাপত্তা চেয়ে পিটিশন মামলা দায়ের করেছেন। অভিযোগে আরও জানা যায় তছকির গংরা চুরি, ডাকাতি, মাদক ব্যবসাসহ অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত রয়েছে। তছকির গংরা ৮ পরিবারে ৫০/৬০ জন লোক একত্রে বসবাস করার কারনে তাদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে এলাকার কেউ মুখ খুলতে বা স্বাক্ষী দিতে সাহস পায়নি। তাদের বসবাস করা জায়গাগুলো সরকারি সম্পত্তি। তাদের অবৈধ কাজের বিরুদ্ধে জুবেল আহমদ প্রতিবাদ করায় বহুদিন ধরে তার উপর আক্রোশান্বিত। জুবেল আহমদের ফিশারীর দক্ষিন পাশে সরকারী ১২ ফুট রাস্তা কেটে তছকির গংদের সীমানার সাথে মিশিয়ে দেয়। ভিবিন্নভাবে জুবেল আহমদের ক্ষতি সাধন করার জন্য ঘরের চার পাশ বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে রেখেছে, ঘরের পাশে আমগাছ, জাম্বুরা গাছ, বাঁশ লাগিয়ে রেখেছে। তছকির গংদের লাগানো গাছের শিকড় ইতিমধ্যে জুবেল আহমদের ঘরের নিচের ঢালাইয়ের ফাটল ধরিয়ে দিয়েছে। তাদের গাছের নিচে জুবেল আহমদের বিদ্যুৎ লাইন, বিদ্যুতের মিটার ও ডিসের লাইন রয়েছে। যে কোনো সময় বিদ্যৎ লাইনে গাছ পড়ে অগ্নি সংযোগের মতো বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এছাড়াও জুবেল আহমদের পৈত্তিক সম্পত্তিও জোড় দখল করে রেখেছে। সরেজমিন তদন্তে জানা যায় তছকির গংদের অন্যতম সদস্য কুতুব মিয়া ২০১৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারী মিঠিপুর গ্রামের চুতুর্থ শ্রেণীর এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিলো এ ঘটনায় ১২ ফেব্রুয়ারী রাতে মৌলভীবাজার সৈয়ারপুর এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে ও ভিকটিমকে উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে মামলার এজাহারে উল্লেখিত বিবাদী কুতুব মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তছকির মিয়া জুবেল আহমদের চাচা এবং জুবেল আহমদ আমারও ভাতিজা। জুবেল আহমদের ফিশারীতে আমাদের অংশ রয়েছে। তাদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শালিস করেছেন।